|
অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন .....কলারোয়ায় আ.লীগের দু’গ্রুপের সমাবেশ
আজকের কলারোয়া -
23/07/2019
কলারোয়ায় উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টুর ছত্রছায়ায় থেকে উপজেলা নির্বাচনের বৈতরণী পার করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বিপক্ষ গ্রুপের সাথে প্রকাশ্যে অবস্থান নিলেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কাজী আসাদুজ্জামান সাহাজাদা। সোমবার (২২জুলাই) সকাল ১১টার দিকে প্রকাশ্য পাল্টাপাল্টি সমাবেশের আয়োজনকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে পুলিশ তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। শান্তিশৃংখলা বজায় রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক আ.লীগের নেতা-কর্মিরা জানান, বিগত কয়েক বছর যাবত দলীয় কোন্দলের কারনে উপজেলা আ.লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মিরা পৃথক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এরমধ্যে কলারোয়া উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ স্বপনের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ ও দুর্নিতী. অনিয়ম, স্বজনপ্রীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লাল্টুর নেতৃত্বে পৃথক অপর একটি গ্রুপ প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়ে থেকে দলীয় কার্যক্রমও পৃথকভাবে পালন করছিলো। এসব নেতা-কর্মিরা জানান, এই কোন্দলের জের ধরে গত ২৪মার্চ অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লাল্টু নেতৃত্বে পৃথক দু’টি প্যানেল নির্বাচনে পরষ্পর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী ফিরোজ আহম্মেদ স্বপনসহ তার সমর্থিত প্যানেল বিপুল ভোটে পরাজিত হন। অপরদিকে উপজেলাবাসী চেয়ারম্যান হিসেবে বেছে নেন অসহায় মানুষের বন্ধু হিসেবে পরিচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লাল্টুকে। একই সাথে লাল্টু সমর্থিত প্যানেলের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী সাহাজাদা ও শাহানাজ নাজনীন খুকুও নির্বাচিত হন।
এদিকে আসন্ন উপজেলা আ.লীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বিভিন্ন এলাকায় কর্মীসভা করছেন উভয়পক্ষ। ওইসব সভার বেশ কয়েকটিতে লাল্টুর দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বি ফিরোজ আহম্মেদ স্বপনের সাথে বক্তব্য খাসহ একাধিক বিষয় নিয়ে উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টুর বিপক্ষে অবস্থান নেয়ার ইঙ্গিত বলে ধারনা করছেন নেতাকর্মীরা ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান- উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টুর বহিষ্কারের অপপ্রচার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নিতে সোমবার বেলা ১১টার দিকে পৌরসভাসহ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের বিপুল সংখ্যক কর্মীসমর্থকরা জমায়েত হন উপজেলা পরিষদ চত্বরে। একই সময়ে পৃথকভাবে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কার্যালয়ের সামনে যুবলীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কাজী সাহাজাদার নেতৃত্বে তার সমর্থকরা জমায়েতের চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে মৃদু উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা তাৎক্ষনিক উভয়পক্ষকে নিবৃত করে তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে দেন।
এদিকে, পূর্ব নির্ধারিত মাসিক আইন শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংসহ উপজেলা প্রশাসনের কয়েকটি মিটিং থাকার কারণে সেখানে উভয় পক্ষকে সমাবেশ করতে নিষেধ করেন উপজেলা প্রশাসন। একপর্যায়ে লাল্টুর সমর্থক বিক্ষুব্ধ জনতা ফুটবল মাঠের শহীদ মিনার চত্বরে সমবেত হয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। আর সাহাজাদার সমর্থকরা স্থান ত্যাগ করে চলে যান।
শহীদ মিনার চত্বরের সমাবেশে উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু অভিযোগ করে বলেন- ‘বিগত বেশ কয়েক দিন কতিপয় কিছু অসাধু দুষ্কৃতকারী বিপথগামী লোকজনকে নিয়ে কলারোয়া উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কাজী সাহাজাদা বিভিন্ন স্থানে আমাকে (লাল্টু) মিথ্যা বহিষ্কারের গুজব ছড়াচ্ছেন। আজ (সোমবার ২২জুলাই) উপজেলা পরিষদের মাসিক আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাতক্ষীরা-১ আসনের সাংসদ মুস্তফা লুৎফুল্লাহ সাহেবের আগমন উপলক্ষে কলারোয়ার শান্ত পরিবেশ ঘোলাটে করার চেষ্টা করে যুবলীগ সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান কাজী সাহাজাদা। অসৎ উদ্দেশ্যে যুবলীগের কমিটি গঠনের নামে সাহাজাদা সকল ইউনিয়ন থেকে কিছু লোকজন এনে বসিয়ে রাখে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সামনে। কলারোয়া থানা পুলিশ ঘটনা বুঝতে পেরে তাদেরকে লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।’
সমাবেশে লাল্টু আরো বলেন- ‘দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি মনে করেন আমি অপরাধী এবং আমাকে যদি বহিস্কার করা হয় আমি মাথা পেতে নেব। কিন্তু এনিয়ে আবারো যদি কোন মিথ্যা অপপ্রচার করা হয় তাহলে আমি উপজেলা আ.লীগের সকল নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে এর দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেবো।’
প্রতিবাদ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আ.লীগের সাবেক আহবায়ক সাজেদুর রহমান খান চৌধুরী মজনু, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহনাজ নাজনীন খুকু, উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সম্পাদক শেখ জাকির হোসেন, সাংগাঠনিক সম্পাদক সম মোরশেদ আলী ভিপি ও রবিউল আলম মল্লিক রবি, কেরালকাতা ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা বিআরডিবি চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান বাবু, লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি এমএ কালাম, কেঁড়াগাছি ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি ভূট্টোলাল গাইন, দেয়াড়া ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আব্দুল মান্নান, উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি আব্দুর রহিম, যুবলীগ নেতা শফিউল আলম শফি, মোস্তাফিজুর রহমান রহমান মোস্ত, মোস্তফা জাহাঙ্গীর আলম শিমুল।
|